।ফারজানা আজিম। আমাদের আশেপাশে প্রতিদিন যা ঘটে সেটা হোক আমার, আপনার বা অন্য কেউর তা থেকে কিছু কিছু তুলে ধরাই হল জীবন থেকে নেওয়া। সেটা যার জীবনই হোক না কেন।প্রতিদিন কত সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, মান অপমান, অভিনন্দন বা অপবাদেই না ভরে আছে আমাদের জীবন। জীবন চলমান তাই এসব নিয়েই আমাদের চলতে হয়। বহমান খরস্রোতা নদীর মতন স্রোতের টানে নদী যেমন কত ঘরবাড়ি সেইসাথে সেই বাড়ির লোকের জীবনের কত স্বপ্ন মিলিয়ে যায় নদীর স্রোতে, ঠিক তেমনি চলমান জীবনে সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যায় হাজারো প্রিয় জন, ভুলে যায় তাদের মধুময় সুখ-দুঃখ বা আনন্দঘন স্মৃতি।
আমরা মানুষেরা বড়ই বিচিত্র। প্রয়োজনে আমরা সব করতে পারি, বলতে পারি, মুহূর্তেই হয়ে উঠতে পারি ফেরাউন। ফেরাউনকে যেমন কোনদিন মানবিক হতে দেখা যায়নি। কথায় আছে, বড় যদি হতে চাও ছোট হও আগে। প্রবাদটি বদলে গেছে। এখন কথা হচ্ছে বড় যদি হতে চাও, শক্তি প্রদর্শন করো আগে।
দিন দিন আমরা যেন কেমন বিবেকহীন হয়ে পড়ছি। ভুলে যাচ্ছি সমস্ত সম্পর্কের বাঁধন, ছিন্ন করছি সমস্ত সম্পর্ক আকাশ শক্তির বদৌলতে। ভালো-মন্দ ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা, শোভন ও অশোভন কিছুই ভাবার সময় নেই আমাদের। কারণ আমরা ঘোড় দৌড়ের উপর আছি, জিততে তো হবেই। কিন্তু ভুলে যাই দৌড় তো একদিন শেষ হবেই ফিরতে হবে আপন ঘরে, আপনজনের কাছে।
আজ আমাদের জীবনে নীতি বা আদর্শের বড়ই অভাব। আমরা যে কিসের পেছনে ছুটছি নিজেরাও জানিনা। সত্যটা বিশ্বের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। যখন টেলিভিশনের সুইচ টিপি তখন দেখি, দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভন্ডামি গুলো। সারাক্ষণ দেশরক্ষার কথা বলে অবিরাম চলছে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে। গৃহ মন্ত্রণালয় ও কিন্তু থেমে নেই, পাল্লা দিয়ে চলেছে সেই সাথে।
বিশ্বে আজ ভালবাসার বড় অভাব। দিন দিন আমরা হয়ে উঠতে চাইছি পরমানবিক শক্তিতে শক্তি ধর।
ধ্বংস করে চলেছি সমস্ত সবুজ। তাই আমাদের মনের সজীবতাও হার মানছে তার কাছে। ধোঁয়াতে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে পরিবেশ, সেইসাথে মনের সজীবতাও। তাই আসুন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও স্লোগান করি, গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান। এবং সেই সাথে আমাদের মনের পরিবেশেও একটা বৃক্ষরোপণ করি যার নাম ভালোবাসা। একদিন সেই বৃক্ষ বড় হবে, ফুল হবে, ফল হবে, শুষে নিবে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং ছড়াবে অক্সিজেন। সজীব হবে প্রতিটি মানুষ, ধন্য হবে বিশ্ব। তাই সব ধরনের পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষানের বড়ই প্রয়োজন।
আজকের দিনটি আগামীর ইতিহাস। আসুন আমরা সবাই ইতিহাসকে বিকৃত নয়, সমৃদ্ধ করি।
একদিন সবই শেষ হয়ে যায় প্রাকৃতিক নিয়মে, থেকে যায় শুধু স্মৃতি চিহ্ন। ঘর বাড়ি গাড়ি সহায়-সম্পত্তি উদ্ধত্য ব্যবহার কিছুই থাকেনা। এমনকি আমি আপনি কেউ থাকবো না। থাকবে শুধু আমাদের চিহ্ন। অর্থাৎ যে কাজ আমরা বেঁচে থাকতে করে যাচ্ছি যে ব্যবহার আমরা একে অন্যের সাথে করছি শুধু তা।
সবি ইতিহাস হবে ঠিক ফেরাউনেএর জীবনীর মত। কত জৌলুসময় কিন্তু ঘৃণিত। অহংকার আর দাম্ভিকতার একমাত্র উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো মিশরের বাদশা, আমরাতো তুচ্ছ মাত্র।
তাই আসুন সবাই মিলে সুস্থ ভাবে বাঁচি এবং অন্যকে বাচাই। সৌহার্দের বাঁধনে আবদ্ধ হই। সজীব করে তুলি পৃথিবী কে, সুস্থ করি নিজেকে।
মনে রাখবেন যা আপনার তা আপনারই থাকবে চলার পথে বাধা বিঘ্ন তাকে কখনো দূরে সরিয়ে দিবে না। সে যেখানে যে অবস্থায় থাকুক না কেন আপনাকে ভুলবে না ভুল বুঝবে না। যদি সেটা না হয় বুঝবেন সে কখনোই আপনার ছিল না। যে ছিলই না তার পিছু ছুটে কষ্ট পেয়ে লাভ নাই কারন সে মরীচিকা ছিল, মরীচিকা কখনো সুখ দেয় না। তাই দেরীতে হলেও মরীচিকা কে চিনতে বা বুজতে শিখুন,। আপনি ও বিশ্ব উভয় সুস্থ থাকবে, ভালবাসায় ভরপুর হবে বিশ্ব। শোক কে শক্তিতে রূপান্তরিত করার নামই সফল জীবন। সুস্থ থাকুক বিশ্বের সকল প্রাণী, মানুষ তো বটেই।
আপনার মতামত লিখুন :