মাহাবুল আলম-মুন্না
মহান আল্লাহ বলেন,”আমি কি তার জন্যে দুই চোখ,একটি জিহ্বা ও দুইটি ঠোঁট সৃষ্টি করিনি?”(সূরা-বালাদ,আয়াত-৮:৯)
আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে অসংখ্য নেয়ামত ও অনুগ্রহ দান করেছে এর মধ্যে জিহ্বা অন্যতম।জিহ্বার সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমেই আমাদের বুদ্ধি ,বিবেচনা ,ভাল-মন্দ,রুচি-অভিরুচি, আভিজাত্যের প্রকাশ ঘটে।পক্ষান্তরে বহুমূল্যের এ নেয়ামতের ভূল ব্যবহার আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক খারাপ করে ফেলে এবং এতে আমাদের প্রতিবেশী ও আত্নীয় স্বজনরাও দারুনভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।এভাবে আমাদের বহু সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।
জনৈক আরবি কবির কবিতা,”তরবারির আঘাতের মলম ও প্রতি ষেধক আছে,কিন্তু জিহ্বার আক্রমণে প্রতিষেধক নাই।”
জিহ্বার মাধ্যমে আমরা অনেক বড় ভুল করে থাকি।এই জিহ্বার আঘাত শারীরিক আঘাত এর চেয়ে অনেক বেশী মারাত্মক এবং ভয়ংকর।জিহ্বার আঘাতের কষ্ট আক্রান্ত ব্যাক্তি ব্যতিত অন্যেরা অনুভব করতে পারে না।এজন্যে বুদ্ধিমানেরা বুঝে শুনে সঠিক পদ্ধতিতে জিহ্বার ব্যাবহার করে।ইসলামী শরিয়তে জিহ্বার নিয়ন্ত্রন ও হেফাজতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
আবু হুরায়রা(রা:) থেকে বর্নিত,রাসূল(সা:) বলেছেন,এক ব্যাক্তি নিজের জিহ্বা দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টিজনক ও সহানুভূতি অর্জনমুলক কথা বলত।কিন্ত এসব ভাল কথার গুরুত্ব সম্পর্কে সে ছিল বেখবর।এ পরিস্হিতেও আল্লাহ তার অজান্তে তার উত্তম কথার দরুন তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।আরেকজন লোক আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন সব কথা বলত,অথচ এদিকে তার কোন খবরও ছিল না।আল্লাহ তালা ঐ লোককে তার এই কর্কষ ভাষার কারনে তার অজান্তে জাহান্নামে নিক্ষেপ করল।(সহি বুখারি)
সব সময় আমাদের বুঝে শুনে কথা বলা উচিত।শুধুমাত্র আঘাত করা অত্যাচার নয়।কথার মাধ্যমেও মানুষকে কষ্ট দেয়া।তাই বলে,কথার বড়ই নিষ্ঠুর।আপনি আপনার অধিনস্হদের সাথেও উত্তম ব্যবহার করুন।কেননা ভাল ব্যবহার বা কথা জান্নাত জাহান্নাম নিশ্চিত করতে পারে।যেখানে যে জানবে যে,তার কথা অবমূল্যায়িত হব,সেখানে সে চুপ থাকবে।কেননা মূখ ফসকে বের হওয়া কথা এবং ধনুক থেকে ছুটে যাওয়া তীর কখনো ফিরিয়ে আনা যায় না।তাই কথা বলার পর আফসোসের পরিবর্তে কথা বলার আগেই চুপ থাকা শ্রেয়।রাসূল(সা::) বলেছেন,যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের ঊপর ঈমান রাখে,সে সর্বদা শুধু ভাল কথা বলবে,নয়তো চুপ থাকবে।(বুখারি ও মুসলিম)
বিশ্বাসী ও ঈমানদারদের সব সময় উত্তম হয়।সে অনর্থক কথা ও অপ্রয়োজনীয় কথা থেকে নিজেকে সর্বদা বিরত রাখে।মহানবী সা:)বলেছেন,অনর্থক কথা ও অপ্রয়োজনীঁয কাজ পরিহার করা মানুষ ঊন্নত ইসলামের প্রমান।(মুয়াত্তা ইমাম মালেক)
আবু মূসা (রা:)বলেন,আমি জিজ্ঞাসা করলাম,হে আল্লাহর রাসূল(সা:) মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ট কে? তখন তিনি ঊত্তর দিলেন,যার হাত ও মূখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।(বুখারি)
মহানবী(সা:) আরো বলেন,যে আমাকে দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী(জিহ্বা) আর দ্ই পায়ের মধ্যবর্তী(লজ্জা)জানামত দিবে,আমি তার জন্যে জন্নাতের জামিন হবো।(বুখারি)মহান আল্লাহ,আমাদের জিহ্বা এবং মূখ নিয়ন্ত্রন করার তৌফিক দান করুক।আমিন।
বিডি টুডে নিঊজ
চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত/
আপনার মতামত লিখুন :